
নিজস্ব প্রতিবেদক । রাউজানটাইমস
সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যত বিলবোর্ড, পোস্টার, ব্যানার বাড়ছে, রাজনীতিতে তত সৌজন্য হারিয়ে যাচ্ছে। কারণ ব্যানার পোস্টারে পার্টির নাম হারিয়ে গেছে, সেখানে এখন ব্যক্তির প্রাধান্য বেড়েছে। বর্তমানের ব্যানারের সাথে ২০ বছর আগের ব্যানারে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আগে আওয়ামী লীগের ব্যানারে-পোস্টারে সৌজন্য নাম ছিল না। আওয়ামী লীগের পোস্টার, ব্যানার, তোরণে পার্টির নাম ছিল। এখন পার্টি হারিয়ে গেছে, ব্যক্তি এসে গেছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে গতকাল রবিবার মুসলিম হলে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সমাবেশস্থলে উপস্থিত পটিয়া ও বাঁশখালীর সংসদ সদস্যকে ব্যানারে ছবি কমানোর অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পটিয়ায় যেতে দেখলাম এমপির ছবি আর ছবি। মোস্তাফিজেরও ছবি আর ছবি।
উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখলে সেখানে ব্যানারের প্রয়োজন নেই।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে মন্ত্রী বলেন, ব্যানারে নয়, হৃদয়ে নাম লিখতে পারবেন ? ওয়াল, ওয়াল। ওয়ালের ভেতরে ওয়াল এখন। অন্য দলের লোকদের এত শত্রু ভাবি না। ঘরের মধ্যে অনেক শত্রু। ওয়াল বন্ধ করুন, ব্রিজ তৈরি করুন। বাইরে ব্রিজ তৈরি করতে হলে, আগে নিজের ঘরে ব্রিজ তৈরি করুন। নিজের ঘরের ওয়ালগুলো ভেঙে ঐক্যবদ্ধ হোন। তা না হলে টিকবেন না।
২১ আগস্টকে রাজনীতির কলঙ্কজনক ঘটনা আখ্যায়িত করে বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্যের জের ধরে মন্ত্রী বলেন, এ কলঙ্ক কে সৃষ্টি করেছে। ক্ষমতার মঞ্চে বসে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে, বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে নির্মূল করে, আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য কে এ কলঙ্কের জন্ম দিয়েছে, বিএনপি। আপনাদের ইতিহাস ২১ আগস্টের কলঙ্কিত ইতিহাস। বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য কলঙ্কিত একটি অধ্যায় আপনাদেরই সৃষ্টি। এ কলঙ্ক আপনারা মুছে ফেলার চেষ্টা করতে পারবেন। কিন্তু তা সম্ভব নয়। মন্ত্রী বলেন, বিশ্বাসঘাতকদের মৃত্যু স্বাভাবিক হয় না। যে বুলেট বঙ্গবন্ধুকে বিদ্ধ করেছে, সে বুলেট জিয়াকেও বিদ্ধ করেছে। হত্যা হত্যাকে ডেকে আনে, খুন খুনকে ডেকে আনে। সব বিশ্বাসঘাতকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। কেউ স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করতে পারেনি। পলাশী-ধানম-ীর ঘটনায় যারা নেপথ্যে ছিল তাদের সবার মৃত্যু অস্বাভাবিক ছিল। এটা অমর লিখন। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের প্রতি আন্তরিক একথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আজকেও একটি সুসংবাদ নিয়ে এসেছি। আগামী ১০-১৩ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করবেন। এ তিনদিনের যে কোন একদিন কর্ণফুলী টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন চীনের প্রেসিডেন্টসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ হাতে নেয়া হবে।
সভাপতির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৫ আগস্টের ঘটনার সাথে ২১ আগস্টের ঘটনার ভিন্নতা নেই। এটা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। একই চক্র বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এরা মরণকামড় দিতে তৎপর রয়েছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের পরিচালনায় স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সদস্য আমিনুল ইসলাম আমিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. জহির উদ্দিন, প্রদীপ দাশ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আ.ক.ম শামসুজ্জামান, এম.এ. ইসলাম, বোয়ালখালী আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন, বাঁশখালী আওয়ামী লীগ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল গফুর, সাতকানিয়া আওয়ামী লীগ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, চন্দনাইশ আওয়ামী লীগ সম্পাদক আবু আহমদ ঝুনু, পটিয়া পৌরসভা মেয়র হারুন অর রশিদ, চন্দনাইশ পৌরসভা মেয়র মাহবুবুল আলম খোকা, সাতকানিয়া পৌরসভা মেয়র মো. জোবায়ের প্রমুখ।
