
নিজস্ব প্রতিবেদক । রাউজানটাইমস
বর্ণাঢ্য র্যালি, কেক কেটা ও আলোচনা সভার মাধ্যমে আনন্দমুখর পরিবেশে গতকাল ৪ জানুয়ারী ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলা উপজেলার নেতাকর্মীগণ। আলোচনা সভায় বক্তাগণ বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের পতাকাবাহী এ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সৎ ও চরিত্রবান হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এমনভাবে নিজেদেরকে গড়ে তুলবে যাতে তারা জনগণের আস্থাভাজন হতে পারে। জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ছাত্রলীগকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
মহানগর ছাত্রলীগ : বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির আলোকে নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে সকাল ১০ টায় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদ্যাপিত হয়। পরে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহম্মেদ ইমুর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক নূরুল আজিম রনি পরিচালনায় শহীদ মিনার পাদদেশে নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচী উদযাপন করা হয়।
বেলা ১১ টায় অনুষ্ঠানের শুরুতে নগরীর বিভিন্ন কলেজ ও ওয়ার্ড থেকে আগত ছাত্রলীগের তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে সকলে শেখ হাসিনার স্বপ্নের নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ পরিবারের ভূমিকা ও কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। দুপুরে অনুষ্ঠানস্থলে প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বিশেষ অতিথি চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন উপস্থিত হন। এসময় আতশবাজি ও ভুভুজলা বাজিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেয়া হয়। বেলা ১২ টা ১৫ মিনিটে কর্মসূচির মূল পর্ব শুরু হওয়ার প্রাক্কালে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। এরপর জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ এবং নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এ.বি.এম মহিউদ্দীন চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দিনের হাতে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রনির হাতে দলীয় পতাকা উত্তোলনের সময় চারদিক থেকে জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। জাতীয় সংগীতশেষে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানে মুখরিত পরিবেশে সকলে পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে অনন্য এক আনন্দের উচ্ছ্বাস ফিরিয়ে আনেন।
প্রধান অতিথি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ছাত্রলীগকে ভাল সংবাদের শিরোনাম হওয়ার চেষ্টায় ব্রতী হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি এসময় বলেন, অপকর্ম করুক আর না করুক ছাত্রলীগ সংবাদ শিরোনাম হয়ে যায়। আমরা চাই ছাত্রলীগ ভাল সংবাদের শিরোনাম হবে। খারাপের শিরোনাম হওয়ার জন্য জাতির জনক এ সংগঠনের প্রতিষ্ঠা করেননি। এটা আমাদের সকলের অনুধাবন করা উচিত। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগ নীতি-নৈতিকতার আদর্শিক সংগঠন। ছাত্রলীগের নেতৃত্বের এ বিষয়টি স্মরণ রেখে কাজ করতে হবে। ছাত্রলীগের নেতৃত্বে এদেশের সকল আন্দোলনের মুক্তির পথ হয়েছিল উদাহরণ দিয়ে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে ছাত্রলীগের ব্যাপক ভূমিকা রাখার আশা ব্যক্ত করেন।
ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তালেব আলী, ইয়াছিন আরাফাত কচি, নাজমুল হাসান রুমি, একরামুল হক রাসেল, জয়নাল উদ্দিন জাহেদ, রুমেল বড়–য়া রাহুল, সৌমেন বড়–য়া, মঈনুল হক শিমুল, নাঈম রনি, আ.ফ.ম সাইফুদ্দীন, নোমান চৌধুরী, শাহীন জোবায়ের বাপ্পি, আমজাদ হোসেন, ওমর ফারুখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, রনি মির্জা, গোলাম সামদানী জনি, সুজন বর্মন, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম মানিক, শওকত আলী রনি প্রমুখ।
অন্যদিকে বর্ণাঢ্য র্যালি ও কেক কেটে গতকাল ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করেছে মহানগর ছাত্রলীগ। সকালে নগরীর জেএমসেন হল চত্বরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দসহ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, থানা ও ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার ছাত্রলীগের কর্মী জেএমসেন হল চত্বরে জমায়েত হয়। সেখানে কেক কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। পরে বর্ণাঢ্য র্যালিতে তিনি নেতৃত্ব দেন। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে জেএমসেন হল থেকে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউমার্কেট এলাকায় এসে র্যালির সমাপ্তি ঘোষণা করেন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফর আলী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সিটি মেয়র ছাত্রলীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে ছাত্রলীগের অগুনন নেতাকর্মীর রক্ত মিশে আছে। ১৯৪৮ সনের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বাংলাদেশ যতদিন টিকে থাকবে ততদিন বহন করে নিবে বাংলার ছাত্র সমাজ। জনাব আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মাতৃভাষা আন্দোলন, শিক্ষার অধিকার আন্দোলন,৬ ও ১১ দফার আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভ্যূত্থান, ১৯৭০ এর নির্বাচন সর্বোপরি ১৯৭১ সনের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। তিনি বলেন, বাংলার মানুষের অধিকার আদায়, স্বাধিকার ও স্বাধীনতার প্রশ্নে ছাত্রলীগের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি মিথুন মল্লিক। উপস্থাপনায় ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ওয়াহেদ রাসেল।
