সোহেল রানা, রাউজান প্রতিনিধি :
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। (২৩ এপ্রিল) মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সঙ্গে চুয়েট কর্তৃপক্ষ, ছাত্র প্রতিনিধি, বাসমালিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক বৈঠকে এ কথা জানানো হয়।
এর আগে গত (২২ এপ্রিল) সোমবার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত হন।
তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা। তিনি নরসিংদীর কাজল সাহার ছেলে। অপরজন তৌফিক হোসেন একই বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি নোয়াখালী সুধারামের নিউ কলেজ রোডের মোহাম্মদ দেলোয়ারের ছেলে।
ঘটনার পরপর শাহ আমানত লাইনের চারটি বাস আটক করে শিক্ষার্থীরা। সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা চুয়েটের প্রধান গেটের সামনে শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে (২৩ এপ্রিল) দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল নয়টা থেকে চুয়েট ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনের কাপ্তাই সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শত শত শিক্ষার্থী সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভের কারণে কাপ্তাই সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। আন্দোলনের পাশাপাশি দুপুর ১২টায় কাপ্তাই সড়কে নিহত শিক্ষার্থীদের গায়েবানা জানাজা এবং বেলা তিনটায় শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো পলাতক চালক ও তাঁর সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা, সব সুযোগ–সুবিধাসংবলিত ক্যাম্পাসে আধুনিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক সরঞ্জামসহ অ্যাম্বুলেন্স–সুবিধা দেওয়া, রাস্তার মাথা এলাকা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক করা, প্রতিটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার কাগজপত্র ও চালকদের লাইসেন্স নিয়মিত যাচাই করা, ছাত্রকল্যাণ পরিষদকে জবাবদিহির আওতায় আনা এবং ছাত্র প্রতিনিধিদল গঠন করা, নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সঙ্গে চুয়েট কর্তৃপক্ষ, ছাত্র প্রতিনিধি, বাস মালিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক বৈঠকে জানানো হয় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি খুব শিগগিরই এ সড়ক সম্প্রসারণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন। আহত শিক্ষার্থী তিন লাখ টাকা পাবেন। কালকের মধ্যেই আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কাগজপত্রসহ ফরমপূরণ করে পাঠিয়ে দেব। দু-একদিনের মধ্যে আমরা সে টাকা পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে পারব বলে আশা করছি।